ঢাকার চায়ের মূল উপাদান - গল্প
ঢাকা শহরের চায়ের সাথে আড্ডার কথা যেমন শুনেছে সে, চায়ের দোকান সম্পর্কে অভিযোগও কম শুনে নি। পরিমানে আধা কাপেরও কম দেয়া, অপরিষ্কার কাপ ইত্যাদি আরো কতো কিছু। স্টেশনের বাইরে একটা চায়ের দোকানে থামলো সে। ভালোই ভীড় দোকানটায়। তাই ধরেই নিলো খুব ভালো মানের হবে।
রং চা ৫ টাকা। তিনটা ভ্যারাইটি। আদা সহ, আদার গন্ধ সহ, আদার দূর্গন্ধ সহ। ব্যাখ্যা দিচ্ছি। আমার উপর বিরক্ত হওয়ার আগেইঃ
- একটায় অল্প আদা দেয়। নামকাওয়াস্তে আদা দেওয়া বলে যেটাকে।
- আরেকটায় আদা বাড়িয়ে দেয় বলে কাপের অন্য গন্ধ-টন্ধ টের পাওয়া যায় না!
- নরমাল লিকার চা যেটায় আদা নাই সেটাতে বারংবার কাপ ব্যবহার আর ময়লা পানিতে ধোয়ার কারনে একটা উটকো গন্ধ পাওয়া যায়। নাক ধরে খেলেও নাকে বকে বুড়ো আংগুল আর তর্জনীকে। এতো বিশ্রী সে গন্ধ!
এমন মন্তব্যই শুনছিল পাশের কাস্টমার থেকে। জনৈক সে কাস্টমার তার শ্যলককে বোঝাচ্ছিলেন চায়ের প্রকারভেদগুলো। শ্যলক ও ঢাকায় নতুন কি না!
সামনে শরবতের ভ্যান ছিল। হিমেল ভাবলো পানিতে যদি জীবানু ময়লা থেকেও থাকে তা শরবতে থাকবে। চা তে তো থাকবে না! নিজেকে বেশ বুদ্ধিমান ভেবে সে চা খাবে বলে ঠিক করলো।
-মামা, একটা আদা চা। আসল জিনিসটা একটু বাড়ায়া দিয়ো।
ঢাকায় প্রথম প্রথম গেলে যেমন হয় আরকি। শুদ্ধ ভাষাচর্চা জেঁকে ধরে। কথায় আছে না, "দুইদিনের বৈরাগী, ভাতেরে কয় অন্ন।"
-আইচ্ছা মামা
২ মিনিট পর
-মামা পানসে লাগতেছে ক্যান!
-মামা আপনিই তো বাড়ায়া দিতে বললেন!
-চিনি-আদা বাড়ায়া দিলে পানসে লাগে?
-আরেহ মামা, আগে বলবেন না। আমি ভাবছি পানি বাড়ায়ে দিতে কইছেন!
চা মামা এমন একটা হাসি দিলো যে তার সামনে আয়মান সাদিককেও ইনোসেন্ট মনে হবে না। হিমেল স্তব্ধ। মামার কথায় স্পষ্টত ফাঁক থাকা সত্ত্বেও যুক্তি আছে বটে! এইটা তো মাথায়ই আসে নাই হিমেলের। পানিইতো চায়ের মূল উপাদান বা আসল জিনিস! সেটা হোক ঢাকার বিশ্রী চা অথবা সিলেটের সেরা চা।
সন্ধ্যা ৬ঃ৫৮
#Shitol_Babu
কোন মন্তব্য নেই
Every comment will be moderated to prevent spamming. Don't put any spam link, Please!