জেল থেকে বলছি - গল্প
আজ ৫ই এপ্রিল,২০১৯।
সেদিন পহেলা বৈশাখের সপ্তাহ তিনেক আগে বন্ধুদের সাথে বের হয়েছিলাম পার্কে শুক্রবার ছুটির দিন বলে। প্রায়ই বের হই, বন্ধুদের সাথে । যতটা ঘোরাঘুরি করি তার চেয়ে বেশি দেখি মেয়েদের। কত রঙ ঢঙয়ের কত শত মেয়ে দেখি ! সুন্দরি, অতিসুন্দরি তো হারহামেশাই দেখা যায় এখন। অপূর্ব সৌন্দর্যের প্রশংসা করতেও ভুলি না। চিকন সুন্দরিদের জন্য একরকম প্রশংসা আবার গ্রামের সরল সৌন্দর্যের অধিকারীদের আরেকরকম প্রশংসা। একি উক্তি দুইজনকে বলার ইতিহাস নেই আমার জীবনে। কখনো কোন ঝামেলা তো হয়-ই না বরং আশেপাশের লোকেরা খুশি হয় আনন্দদায়ক প্রশংসাবাক্য শুনে। যাদের বলি তাদের কেমন লাগে কে জানে ? খারাপ তো লাগার কথা না । প্রশংসা তো তাদের প্রাপ্তি।
বাসায় এ ব্যাপারটা জানতো না। জানাই নি আমি। অবশ্য আমার মা সবসময় আমার পক্ষে বলেন, আমি যা বলি তাই ঠিক। যা করি তাও ঠিক বলে গন্য হয় বাসায়। কখনো বললেও মা মানা করবে বলে তো মনে হয় না। তবুও বলি না। বাসায় দিন কাটে সবার সাথে হেসে খেলে, মজা করে। সবার সাথে মিশতে পারার অসাধারন গুন আছে আমার। কেও অসন্তুষ্ট হয় না কখনোই আমার উপর। আমার মা অবশ্য একটা জনপ্রিয় সামাজিক উন্নয়নমূলক সংগঠনের সভাপতি। বাবার ব্যাবসায়ের পাশাপাশি রাজনীতি করেন। অনেকে বলে আমি নাকি তাদের প্রভাব প্রতিপত্তির জন্য সবার সাথে মেশার সুযোগ পাই। আমার তা মনে হয় না। কারণ আমি কখনো দেখিনি আমার সাথে কেও না হেসে কথা বলতে।
সেদিন একটা মেয়েকে দেখেছিলাম সাইকেল চালাতে। তাকে বললাম,” একটু বসি পিছনে ?” হা হা হা, আমি হেসে উঠলাম, সাথে আমার বন্ধুরা। এরপর হাঁটতে হাঁটতে আরো মজার মজার কথা বললাম। মেয়েটাকে একটুও ভীত মনে হয় নি। সে পার্কের পুলিশের কাছে গিয়ে বললো। এমনটা আগে হয় নি কখনো, মেয়েটা বোধ হয় চিনেনি আমাকে। ও জানে না হয়তো অথবা বোঝে নি যে আমি শুধু মজা করছিলাম। পুলিশ অবশ্য আমাকে চেনে। মেয়েটা নাছোড়বান্দা, আমার শাস্তি না দেখে তার শান্তি হবে না। পুলিশ সার্জন আমার মাকে ফোন দিলেন। মা আসলো।
-কি হয়েছে?
মেয়েটা ঘটনা বিস্তারিতভাবে বললো এবং বুঝিয়ে দিল যে আমি ইভটিজিং করেছি। আমার মায়ের মুখ লাল হয়ে গেল, হয়তো মেয়েটির উপর রাগ করেছে। মা মাথা নিচু করে নিল।
-মা কিছু বল তুমি, আমি কি ভুল কিছু করেছি? একটু মজা করছিলাম।
কষে চড় পড়লো আমার গালে। তার মানে মা আমার উপর রেগে গেছেন বোঝাতে চাইছেন।
-তুই কথা বলছিস তবুও! লজ্জা করে না!
-মা আমি তো...
দ্বিতীয় গালেও পড়লো এবার।
-ভেবেছিলাম তুই সবার আদর পেয়ে ভাল মানুষ হচ্ছিস, তোকে যে অমানুষ করে ফেলেছি দিন দিন তা ভাবিনি। তোর বাবাই ঠিক ছিল মনে হচ্ছে। তোর ঘরে ছোট বোন আছে...
মায়ের মুখে এমনভাবে কথা বলা আগে শুনিনি কখনো। চড় খাওয়া তো অনেক পরে। এই বিষয়টা ভাবিয়ে তুললো আমাকে। এটা এমন কি কাজ ? হ্যাঁ কোথাও পড়েছিলাম যে এটা অনেকে মেয়েই নিজেদের নিরাপত্তার ঝুকি হিসেবে দেখে। তাদের স্বাধীন চলাফেরায় একটা বাধা এটা। ভেবেছিলাম এখানে শেষ হবে সব। নাহ, মা আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দিল?!
ওহহো, পরে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবেন। লোকজনের ঝামেলা এড়াতে হয়তো করেছেন এমনটা। আমি খুশিমনে গেলাম। মা তখনো মাথা নিচু করে আছেন, আশেপাশে লোক জড়ো হচ্ছে মাকে নানা প্রশ্ন করছে, “ আপনি নিজে সমাজ সচেতনতার মডেল, আপনার ছেলে এমন কাজ করেছে। তাহলে সাধারণ মানুষ কাদের দেখে শিখবে?” পুলিশ ভ্যানটা তখন ছেড়ে দিয়েছে । মাকে দেখছি আমি, তখনো মাথা তুলেন নি। আমি কি ভুল করলাম? সত্যি?
পরদিন ছিল বিশেষ কোন একটা দিন। জেলে সবাই একটু খুশি ছিল কেন জানি। জিজ্ঞেস করলাম একজনকে। বললো, “ এখন মিটিং আওয়ার। আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করা যাবে এখন । ” “তারা জানবে কি করে?” “জানে, বাইরে সময় লেখা আছে ”
গতকাল মা আসেনি ছাড়াতে। হয়তো স্ট্র্যাটেজি এটা। সমাজসেবক কি না তিনি! দেরী করে ছাড়িয়ে নিবেন। আজ তো দেখা করতে আসবেন নিশ্চয়ই!
ঘন্টা বাজে একটা। সবাই এক এক করে দাঁড়ায় একটা লোহার বেড়ার সামনে। স্বজনের হাতটা ধরা যায় সেখান থেকে। কারোর মা, কারোর স্ত্রী, কারোর বাবা এসে দেখা করে যাচ্ছে। সবাই অপরাধী, তবুও পরিবারের সদস্যদের টান তো তুলনা হয় না। কিন্তু মা, মা কোথায়? মাকে দেখা যাচ্ছে না কেন?
ওদিকে এক আসামীর বোন আসলো দেখা করতে। ভাইয়ের হাত ধরে সে কি কান্না। হৃদয়বিদারক সে দৃশ্য। তা দেখে বোনের কথাও মনে পড়ে গেল।
কেন যেন কাঁদতে থাকলাম আমিও। অজান্তেই।
এভাবে দিন যায়, মিটিং আওয়ার যায়। মা আসে না, বোন ও আসে না। বাবার কথা তো ভাবাই যায় না। মনে হতে থাকে আমি অপরাধী। অপরাধীই তো। খেয়াল আসতে থাকে শাস্তিটা কেন দরকার। একাভাবে এত অসহায় বোধ করিনি কখনো।
বোনটার কথা মনে পড়তে থাকলো। আচ্ছা আমার বোনের সাথে কেও এমন করলে আমি কি করতাম? পুলিশে দিতাম?
হয়তো দিতাম না, সেখানেই কিছু একটা করে ফেলতাম সেই লোকটার। আমি উত্তর পেয়ে গেলাম। আমার মায়ের হতাশা-ক্ষোভ লোক দেখানো ছিল না। আমার বোঝায় ভুল ছিল। এতদিন মা কিছু জানতোই না। বলেই নি কেও জানবে কিভাবে? খারাপ লাগছে একা একা, খুব খারাপ। ভাল লাগছে মায়ের সিদ্ধান্তে, নিজের ছেলেকে ছাড় দেননি। এটা ভেবে আবার খারাপ লাগছে সেই মায়ের সন্তান হিসেবে আমি কিভাবে অমন কাজ করলাম !
মা আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি? মা তুমি শুনছো? আমি আর করবো না অমন। আমি জেলে কাঁদছি, মা তুমি শুনছো?
আমাকে জেল থেকে বেরোতে হবে। আমার বোনের জন্য, সাইকেলের সেই মেয়েটার জন্য। আমার মত যারা ভুল করে তাদের জন্য, তারা হয়তো বোঝে না তারা ভুল করছে। বোঝাতে হবে আমার বন্ধুর অভিভাবকদের মতো অভিভাবকদের, যারা তাদের ছেলেদের অন্য লোকেদের কাছ থেকে আগলে রাখেন অপরাধ করার পরও। শাস্তি পেতে দিন তাদের, তারাও বুঝবে। নাহয় জেলের কয়েকটা দিন অন্তত তারা ওই খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকলো! মা তুমি শুনছো? আমি ভুল বুঝতে পেরেছি ...
Shaon 070
#Say_No_to_ Eveteasing
রাত ০৭.০৩
৫ই এপ্রিল, ২০১৯
সেদিন পহেলা বৈশাখের সপ্তাহ তিনেক আগে বন্ধুদের সাথে বের হয়েছিলাম পার্কে শুক্রবার ছুটির দিন বলে। প্রায়ই বের হই, বন্ধুদের সাথে । যতটা ঘোরাঘুরি করি তার চেয়ে বেশি দেখি মেয়েদের। কত রঙ ঢঙয়ের কত শত মেয়ে দেখি ! সুন্দরি, অতিসুন্দরি তো হারহামেশাই দেখা যায় এখন। অপূর্ব সৌন্দর্যের প্রশংসা করতেও ভুলি না। চিকন সুন্দরিদের জন্য একরকম প্রশংসা আবার গ্রামের সরল সৌন্দর্যের অধিকারীদের আরেকরকম প্রশংসা। একি উক্তি দুইজনকে বলার ইতিহাস নেই আমার জীবনে। কখনো কোন ঝামেলা তো হয়-ই না বরং আশেপাশের লোকেরা খুশি হয় আনন্দদায়ক প্রশংসাবাক্য শুনে। যাদের বলি তাদের কেমন লাগে কে জানে ? খারাপ তো লাগার কথা না । প্রশংসা তো তাদের প্রাপ্তি।
বাসায় এ ব্যাপারটা জানতো না। জানাই নি আমি। অবশ্য আমার মা সবসময় আমার পক্ষে বলেন, আমি যা বলি তাই ঠিক। যা করি তাও ঠিক বলে গন্য হয় বাসায়। কখনো বললেও মা মানা করবে বলে তো মনে হয় না। তবুও বলি না। বাসায় দিন কাটে সবার সাথে হেসে খেলে, মজা করে। সবার সাথে মিশতে পারার অসাধারন গুন আছে আমার। কেও অসন্তুষ্ট হয় না কখনোই আমার উপর। আমার মা অবশ্য একটা জনপ্রিয় সামাজিক উন্নয়নমূলক সংগঠনের সভাপতি। বাবার ব্যাবসায়ের পাশাপাশি রাজনীতি করেন। অনেকে বলে আমি নাকি তাদের প্রভাব প্রতিপত্তির জন্য সবার সাথে মেশার সুযোগ পাই। আমার তা মনে হয় না। কারণ আমি কখনো দেখিনি আমার সাথে কেও না হেসে কথা বলতে।
সেদিন একটা মেয়েকে দেখেছিলাম সাইকেল চালাতে। তাকে বললাম,” একটু বসি পিছনে ?” হা হা হা, আমি হেসে উঠলাম, সাথে আমার বন্ধুরা। এরপর হাঁটতে হাঁটতে আরো মজার মজার কথা বললাম। মেয়েটাকে একটুও ভীত মনে হয় নি। সে পার্কের পুলিশের কাছে গিয়ে বললো। এমনটা আগে হয় নি কখনো, মেয়েটা বোধ হয় চিনেনি আমাকে। ও জানে না হয়তো অথবা বোঝে নি যে আমি শুধু মজা করছিলাম। পুলিশ অবশ্য আমাকে চেনে। মেয়েটা নাছোড়বান্দা, আমার শাস্তি না দেখে তার শান্তি হবে না। পুলিশ সার্জন আমার মাকে ফোন দিলেন। মা আসলো।
-কি হয়েছে?
মেয়েটা ঘটনা বিস্তারিতভাবে বললো এবং বুঝিয়ে দিল যে আমি ইভটিজিং করেছি। আমার মায়ের মুখ লাল হয়ে গেল, হয়তো মেয়েটির উপর রাগ করেছে। মা মাথা নিচু করে নিল।
-মা কিছু বল তুমি, আমি কি ভুল কিছু করেছি? একটু মজা করছিলাম।
কষে চড় পড়লো আমার গালে। তার মানে মা আমার উপর রেগে গেছেন বোঝাতে চাইছেন।
-তুই কথা বলছিস তবুও! লজ্জা করে না!
-মা আমি তো...
দ্বিতীয় গালেও পড়লো এবার।
-ভেবেছিলাম তুই সবার আদর পেয়ে ভাল মানুষ হচ্ছিস, তোকে যে অমানুষ করে ফেলেছি দিন দিন তা ভাবিনি। তোর বাবাই ঠিক ছিল মনে হচ্ছে। তোর ঘরে ছোট বোন আছে...
মায়ের মুখে এমনভাবে কথা বলা আগে শুনিনি কখনো। চড় খাওয়া তো অনেক পরে। এই বিষয়টা ভাবিয়ে তুললো আমাকে। এটা এমন কি কাজ ? হ্যাঁ কোথাও পড়েছিলাম যে এটা অনেকে মেয়েই নিজেদের নিরাপত্তার ঝুকি হিসেবে দেখে। তাদের স্বাধীন চলাফেরায় একটা বাধা এটা। ভেবেছিলাম এখানে শেষ হবে সব। নাহ, মা আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দিল?!
ওহহো, পরে ছাড়িয়ে নিয়ে যাবেন। লোকজনের ঝামেলা এড়াতে হয়তো করেছেন এমনটা। আমি খুশিমনে গেলাম। মা তখনো মাথা নিচু করে আছেন, আশেপাশে লোক জড়ো হচ্ছে মাকে নানা প্রশ্ন করছে, “ আপনি নিজে সমাজ সচেতনতার মডেল, আপনার ছেলে এমন কাজ করেছে। তাহলে সাধারণ মানুষ কাদের দেখে শিখবে?” পুলিশ ভ্যানটা তখন ছেড়ে দিয়েছে । মাকে দেখছি আমি, তখনো মাথা তুলেন নি। আমি কি ভুল করলাম? সত্যি?
পরদিন ছিল বিশেষ কোন একটা দিন। জেলে সবাই একটু খুশি ছিল কেন জানি। জিজ্ঞেস করলাম একজনকে। বললো, “ এখন মিটিং আওয়ার। আত্মীয় স্বজনদের সাথে দেখা করা যাবে এখন । ” “তারা জানবে কি করে?” “জানে, বাইরে সময় লেখা আছে ”
গতকাল মা আসেনি ছাড়াতে। হয়তো স্ট্র্যাটেজি এটা। সমাজসেবক কি না তিনি! দেরী করে ছাড়িয়ে নিবেন। আজ তো দেখা করতে আসবেন নিশ্চয়ই!
ঘন্টা বাজে একটা। সবাই এক এক করে দাঁড়ায় একটা লোহার বেড়ার সামনে। স্বজনের হাতটা ধরা যায় সেখান থেকে। কারোর মা, কারোর স্ত্রী, কারোর বাবা এসে দেখা করে যাচ্ছে। সবাই অপরাধী, তবুও পরিবারের সদস্যদের টান তো তুলনা হয় না। কিন্তু মা, মা কোথায়? মাকে দেখা যাচ্ছে না কেন?
ওদিকে এক আসামীর বোন আসলো দেখা করতে। ভাইয়ের হাত ধরে সে কি কান্না। হৃদয়বিদারক সে দৃশ্য। তা দেখে বোনের কথাও মনে পড়ে গেল।
কেন যেন কাঁদতে থাকলাম আমিও। অজান্তেই।
এভাবে দিন যায়, মিটিং আওয়ার যায়। মা আসে না, বোন ও আসে না। বাবার কথা তো ভাবাই যায় না। মনে হতে থাকে আমি অপরাধী। অপরাধীই তো। খেয়াল আসতে থাকে শাস্তিটা কেন দরকার। একাভাবে এত অসহায় বোধ করিনি কখনো।
বোনটার কথা মনে পড়তে থাকলো। আচ্ছা আমার বোনের সাথে কেও এমন করলে আমি কি করতাম? পুলিশে দিতাম?
হয়তো দিতাম না, সেখানেই কিছু একটা করে ফেলতাম সেই লোকটার। আমি উত্তর পেয়ে গেলাম। আমার মায়ের হতাশা-ক্ষোভ লোক দেখানো ছিল না। আমার বোঝায় ভুল ছিল। এতদিন মা কিছু জানতোই না। বলেই নি কেও জানবে কিভাবে? খারাপ লাগছে একা একা, খুব খারাপ। ভাল লাগছে মায়ের সিদ্ধান্তে, নিজের ছেলেকে ছাড় দেননি। এটা ভেবে আবার খারাপ লাগছে সেই মায়ের সন্তান হিসেবে আমি কিভাবে অমন কাজ করলাম !
মা আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি? মা তুমি শুনছো? আমি আর করবো না অমন। আমি জেলে কাঁদছি, মা তুমি শুনছো?
আমাকে জেল থেকে বেরোতে হবে। আমার বোনের জন্য, সাইকেলের সেই মেয়েটার জন্য। আমার মত যারা ভুল করে তাদের জন্য, তারা হয়তো বোঝে না তারা ভুল করছে। বোঝাতে হবে আমার বন্ধুর অভিভাবকদের মতো অভিভাবকদের, যারা তাদের ছেলেদের অন্য লোকেদের কাছ থেকে আগলে রাখেন অপরাধ করার পরও। শাস্তি পেতে দিন তাদের, তারাও বুঝবে। নাহয় জেলের কয়েকটা দিন অন্তত তারা ওই খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকলো! মা তুমি শুনছো? আমি ভুল বুঝতে পেরেছি ...
Shaon 070
#Say_No_to_ Eveteasing
রাত ০৭.০৩
৫ই এপ্রিল, ২০১৯
কোন মন্তব্য নেই
Every comment will be moderated to prevent spamming. Don't put any spam link, Please!