Header Ads

Bodrul-Islam-bodrul-070-bodrul070-bodrul-070-tutorial

ঘাসফুল, শীতার্ত লোক ও উচ্ছল শিশুর দল

বাকি চারটা আজানের চেয়ে ফজরের আজানের আবেদনটা অন্যরকম। “ঘুম থেকে নামাজ ভাল” আরবিতে যখন মুয়াজ্জিন বলেন, না যেতে পারলে একটা অপরাধবোধ কাজ করে। আজ অমনটা হয় নি, আজান শুনিনি আজ। তার চেয়েও বড় কথা অনেক দিন পর নামাজ আদায় করতে পেরেছি।
নামাজ শেষে রুমে এসে আবার বের হলাম। বাকসোর মতো হলের মাঝখানটায়। যেখানে ব্যাডমিন্টন খেলার জায়গা, তার পাশের ইটের বেঞ্চিতে বসলাম। পরিকল্পিতভাবেই। এমন সময় খুব একটা জেগে থাকে না মানুষ, তবুও দেখতে অদ্ভুত না লাগার জন্য মোবাইল হাতে নিয়ে দেখতে থাকলাম। "প্রেমিকপুরুষ ক্ষুদেবার্তা দেখছে" বাইরে থেকে দেখলে যেন অমন মনে হয় এমনভাবে।
সকালের, নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে ভোরবেলার; যখন সূর্যটা নতুন উঠে, বাতাসটা গায়ে লাগার অনুভুতিই যেন একটা ভালোলাগা। বাতাস লাগছিল পাকা ব্যাডমিন্টন কোর্টের পাশের ঘাসগুলোতে। ছোট কাশফুল বলা যায় সেগুলোকে। মাথার তুলোগুলো পরিপক্ব হয়ে হয়তোবা কোন শিশুর আগ্রহভরা খেলার কারন হতে প্রস্তুত। ছোটবেলায় এগুলো নিয়ে মেতে থাকতাম। বাতাসে উড়তো, পিছু পিছু ছুটতাম। ধরার পর মনে হতো ছুটে চলা সময়টাই ভাল ছিল বৈকি! যেমনটা চাকরি পাবার পর অনেকের মনে হয় ভাল ছিল স্কুলে, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে হাতে গোনা টাকায় কাটিয়ে দেয়া সময়টা।
ওহ, ছোট কাশফুলের কথা বলছিলাম। কাশফুলগুলো দুলছিল ভোরের মৃদু বাতাসে। আমি তখন লম্বা করে শ্বাস নিচ্ছিলাম। ভোরের বাতাসের সবটুকু সুবিধা নেয়াই উদ্দেশ্য। ওগুলো তখনো নেচে চলেছে। মনে হচ্ছিল শীতার্ত মানুষ যেন কাঁপছে থরথর করে।
নাহ, নেতিবাচক উদাহরণ টানা উচিত হয় নি। ভোরের ঝিরিঝিরি বাতাসে ছোট কাশফুলগুলো শিশুদের মতো নাচছিল। কাঠফাটা রোদে শিশুদের দল কোমড় পানিতে নেমে যেমন অর্থহীনভাবে ডানে বায়ে গা নাড়িয়ে নাচে, তেমনভাবে নাচছিল সেগুলো।
বস্তুত জীবনে ইতিবাচক হওয়াটা জরুরী। এতে হয়তো অনেকের অসুবিধা, বিপদ ঢাকা পরার একটা সম্ভাবনা থাকে। তবুও সেগুলো ছোট ছোট ভালোলাগা, ঘাসফুলের হাসিতে লুকিয়ে রাখাটা ঈর্ষীত সমাজের মনে একটুকুন হলেও স্বস্তি দিতে পারে।
প্রাতিষ্ঠানিক জীবনে সাফল্য-ব্যার্থতার দোলাচলে থেকেও ইতিবাচক থাকতে হবে, ব্যার্থ হলেও। আপনার যখন হতাশ হওয়ার অনেক কারন থাকে, বই খুললেই দেখতে পারবেন বিখ্যাত লোকদের কিছু অভ্যাস থাকে। তারা কেও কেও ভিক্ষুকদের খালি হাতে যেতে দেননা, কেউবা ভিক্ষাবৃত্তি থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে অপেক্ষাকৃত সম্মানজনক পরিশ্রমের কাজে নিয়োজিত করেন তাদের। কারোর হয়তোবা বই পড়ার শখ থাকে, সেটাও কোন এক পাঠাগারে। আপনার কি আছে এমন?
আছে, হতাশ হওয়া যাবে না। এইযে আপনি মিষ্টির দোকান থেকে নিয়মিত দশ টাকার কালোজাম বা দানাদার অথবা চমচম কিনে খান (আসলে ওটা আপনার না, আমার অভ্যাস)! ছোলা বিক্রেতা মামার কাছ থেকে ডিম দিয়ে ছোলা খান (এটাও)! অথবা সেই হোসিয়ারী দোকানের কথাই ধরুননা যেখনকার জাংগিয়া কিনে কিনে ছাত্রজীবন পার করে দিলেন (এবং এটাও)! এগুলোই তো আপনার অভ্যাস। নিয়তই করছেন।
জীবনে ব্যার্থ হয়েছেন; প্রেমে, পড়ালেখায়, ভালো বন্ধু পেয়েছেন ভেবে? হয়েছেন। বলার মত আর কি লাগে আপনার?
এখন শুধু বিখ্যাত হবার পালা। এটা হওয়া ছাড়া অন্য কোন সুযোগ রাখননি আপনি। অবশ্য বিখ্যাত বলতেই যে আপনাকে স্কুল-কলেজের হাজারো তরুনীর মুঠোফোনে প্রথম চাপে ভেসে উঠা ছবি হতে হবে, ব্যাপারটা অমন নয়।
পার্কে হাওয়াই মিঠাই বিক্রি করা ছেলেটার কাছ থেকে হাওয়াই মিঠাই কিনে তাকেই খাইয়ে দিন! না খাওয়ান, টাকাটা দেয়ার সময় একটা হাসি দিয়ে দিন, ওতেই হবে। ওতে হয়তো খবর ছাপবে না আপনার নামে কিন্তু মনের প্রশান্তিটা আপনি খবরের কাগজে লিখেও প্রকাশ করতে পারবেন না।
আপনাকে শুধু একটু ইতিবাচক হতে হবে ব্যাস।
Shaon 070
6:26 AM
29-04-2019

কোন মন্তব্য নেই

Every comment will be moderated to prevent spamming. Don't put any spam link, Please!

© Anari Production 2020. merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.