Header Ads

Bodrul-Islam-bodrul-070-bodrul070-bodrul-070-tutorial

একহাত... (গল্পটি কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। সম্ভব হলে গভীর রাতে একা পড়বেন)




রনি। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র। অনেক কাঠ-খর পুড়িয়ে আদাজল খেয়ে পড়াশোনা করে ভর্তি হয়েছে একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিশ্ববিদ্যালয়ের নামটা না-ই বললাম)।
মুক্তির সুযোগের অপেক্ষায় থাকা ছেলেটা এবার মুক্ত। নতুন পরিবেশের হাওয়া লাগতেই তার মনে রঙ লাগে। সবার কাছে রঙিন গল্প শুনতে থাকে নেশার জগতের। তার বন্ধু নেই এত। হাই হ্যালো সম্পর্ক সবার সাথেই। একরকম একা সে। ভাবে মাঝে মাঝে, একজন বন্ধু হলে ভালোই হতো। বন্ধু নেই তো কি হয়েছে গাজা সেবনে তো আর বাধা নেই!
যুক্তিতে ভুল পেল না কোন। তাই সে ক্যাম্পাসের বাইরে থেকে এনে গোপনে গাজা দিয়ে নেশার জগতে প্রবেশ করলো। বন্ধু না থাকায় আর প্রয়োজন মনে না করায় সে ভাবলো এমন একটা জায়গা খুজতে হবে যেখানে লোকসমাগম কম, অন্তত কোন একটা সময়ে।
খুজে পেতেও সমস্যা হলো না। আবাসিক হলের পেছনেই একটা নিরব স্থানে কামিনী গাছের তলায় বসলো সে। হলের পেছনে হলেও কয়েকশ গজ পর্যন্ত একটা ছোট ঝোপ ছাড়া আর কিছু নেই সেখানে।
এভাবে নিয়মিতই যেতে থাকে। মধ্যরাতে, যখন কেও থাকেনা সেখানে।
কেটে যায় বেশ কিছুদিন। একদিন নতুন মানুষকে আসতে দেখলো তার দিকে। ভেবেছিল উঠে যাবে, কিন্তু গঞ্জিকা চেতনা তাকে যেতে দেয় না। "এটা আমার জায়গা, আমি ছেড়ে যাব না।"
কাছে আসতেই বোঝা গেল এটা নিরাপত্তা রক্ষিও নয়, সাধারণ গঞ্জিকাসেবী!
একটু ছেচরা টাইপ, এসেই চেয়ে বসলো। রনি সরাসরি না করে। লোকটা মন খারাপ করে চলে যায়।
পরদিন আবার হাজির, তবে আজ কল্কি নিয়ে এসেছে। ইগোতে লেগেছে বোধ হয় কাল। এসে কিছু না বলে লোকটা রনির একটু দূরে যেয়ে বসে। রনি তোয়াক্কা করে না।
এভাবে বেশ কয়দিন যায়। লোকটা আসে, রনিও খায় সেও খায়। তবে একা একাই। যাকে বলা যায় বিরল প্রজাতির একমাত্র নিদর্শন "অসামাজিক গাজাখোর"!
সেদিন ক্লাসে গিয়েছে৷ পেছনে বসে মেয়েরা গল্প করছে, আজগুবি ভুতের গল্প। বয়েজ হলের পেছনে নাকি ভুত দেখা যায়। রনি ভাবে তাকে হয়তো কেও দেখেছে, কিন্তু না। সবাই ভুতের হাতটা দেখে শুধু। বগল থেকে কাটা হাত! শোনা যায় প্রেমের শাস্তি হিসেবে হাত কেটে দেয়া হয়েছিল এক প্রেমিকের। তারই হাত নাকি এখনো দেখা যায়!
রনি একটু ভাবনায় পরে যায়। সত্যিই যদি হয় এমন। ওই লোকটা! নাহ ওর তো সবটাই দেখা যায় শরীর।
সন্দেহ যায় না রনির। ভয় জমতে থাকে। তবু সে সিদ্ধান্ত নেয় সেখানে যাবে।
রাত 2 টা। রনি দুইটা টান দিয়ে বসে আছে। লোকটা আসলো। আজ যেভাবেই হোক পরখ করতে হবে। বাহানা পায় রনি।
"আরে ভাই, প্রতিদিন দেখা হয় কথা হয় না।" হ্যান্ডশেক করে রনি। নাহ স্পর্শে মানুষের ভাব। নেশায় বুদ রনি কিন্তু ছলে-বলে সে আরেকটা বাহানা করে, "ভাইয়ের চুল তো সেই কাট দিছেন"
"আপনার ভাবি, মানে আমার গার্ল্ফ্রেন্ডে নিয়া গিয়েছিল সেলুনে।"
নাহ লোকটা মানুষ। খামাখাই কি ভাবছে সে। এভাবে কেটে যায় ক্যম্পাসের দিনগুলো। বিএসসি কমপ্লিট হয়ে যায়। এমএসের জন্য পাড়ি জমায় রাজধানীর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
সময় যেতে থাকে। বন্ধুহীন ক্যাম্পাসের কথা মনে পড়ে। সবাই অবশ্য তাকে বন্ধুই ভাবতো, সে ভাবতো না।
তার রুমমেট সেই ক্যাম্পাসেই এমএস করছিল। তাকে ফোন দিল, "বন্ধু আছ ক্যাম্পাসে?"
"কি খবর বন্ধু, আছি। আসো একবার।"
"আচ্ছা, এই বন্ধে আসছি তাহলে"
বলেই রেখে দিল। ছুটি পেতেই পুরনো ক্যাম্পাসে চললো।
যেতে যেতে সন্ধ্যা। "আজ রাতেই বেরোব নাহয় ঘুরতে?"
"ঠিক আছে বন্ধু।"
2:15 AM
রাত তখন আধা-সমাপ্ত। কি এক কৌতুহল তাকে কামিনী গাছের দিকে টানছিল। বন্ধুকে নিয়ে চললো সেখানে। ঝোপটা নেই। তবে কামিনী গাছ রয়েছে। আগের মতোই চারপাশ খালি কয়েকশ গজ পর্যন্ত।
হঠাৎ কামিনী গাছের নিচে কি যেন নড়ে উঠলো! হাত ছিল নাকি? কাছে যেয়ে কিছুই দেখলো না।
"আরে বন্ধু! কি খামোখা ভয় পাচ্ছো!"
বলে রুমমেট তার কাধে হাত রাখে। রনি অভয় পায়। চলতে থাকে। চলতে চলতে ভাবতে থাকে সে কত অসামাজিক। বন্ধু কাধে হাত দিয়ে হাটছে আর সে হাত গুটিয়ে আছে। বন্ধুর কাধে হাত রাখলো। রনির হাতটা আবার তার কাছেই ফিরে আসে। বন্ধু কি অন্য পাশে? ডানে বামে তাকায় সে, নেই। পিছনেও নেই। কাধের হাতটা এখনো সরেনি। মানুষের জ্যান্ত হাত। অভয় দিচ্ছে রনিকে...
#Shaon_070
2:16 AM
07/03/2017

২টি মন্তব্য:

Every comment will be moderated to prevent spamming. Don't put any spam link, Please!

© Anari Production 2020. merrymoonmary থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.